রাজধানীর বনানী ক্লাবে খেতে গিয়ে দলের ৫৩ জন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তারের পর বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, বিএনপি তো কোনো আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি নয়, তাহলে কেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা ক্লাব-রেস্তোরাঁয় বসে সামাজিক অনুষ্ঠান বা বৈঠকে মিলিত হতে পারবে না।
বেলা ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান ও আবদুস সালামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল ডিএমপিতে যায়। তারা প্রায় ৪০ মিনিট ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে কথা বলে। বৈঠকে গত রোববার রাতে বনানী ক্লাব থেকে ৫৩ জন নেতা-কর্মীকে আটক করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দেওয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতারা কথা বলেন।
দলীয় সূত্র জানায়, মূলত পবিত্র রমজান মাসের ইফতার কর্মসূচির বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারকে অবহিত করতে প্রতিনিধিদল ডিএমপিতে যায়। রাজধানী ঢাকায় এবার থানাভিত্তিক ইফতার মাহফিল করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। সে হিসাবে মহানগরীর ৫০ থানায় ৫০টি ইফতার অনুষ্ঠান হবে। প্রতিনিধিদল অনুষ্ঠানগুলোর স্থান ও তারিখ কমিশনারকে জানিয়েছে।
বৈঠক শেষে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যাতে নির্বিঘ্নে ইফতার অনুষ্ঠানগুলো করতে পারি, সে জন্য পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছি।’
আবদুস সালাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপিরও আহ্বায়ক। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগরে আমাদের নেতা-কর্মীদের বাসাবাড়িতে গিয়ে গিয়ে পুলিশ হয়রানি করছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো ডিএমপি কমিশনারকে অবহিত করার পাশাপাশি বিষয়টা জানা যে কী কারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। বিএনপি আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি না যে বিএনপি কোনো বাড়িতে বা রেস্টুরেন্টে বসে সভা বা সামাজিক অনুষ্ঠান করতে পারবে না।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, সরকারি দল থেকে প্রায়ই বলা হয়, যাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, কেবল তাঁদেরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করে। এ কথাটা সত্য নয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। সর্বশেষ যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েমকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে নতুন কোনো মামলা ছিল না। পুরোনো সব মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন। বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির প্রতিনিধিদল।
ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্রেপ্তারের ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, “আমরা শুনেছি, জেনেছি। আমরা এ ব্যাপারে দেখব, ভবিষ্যতে যেন এমন না হয়।” ডিএমপি কমিশনার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’
বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্যসচিব রফিকুল আলম।